Thursday, July 7, 2016

ঘুরে আসুন নওগাঁ জেলা
যাতায়াত ব্যবস্থাঃ
ঢাকা থেকে সড়ক ও রেল উভয় পথেই যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
সড়ক পথঃঢাকা থেকে সড়কপথে নওগাঁ জেলার দূরত্ব ৩৯৭ কিলোমিটার। ঢাকার কল্যানপুর এবং গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন কোম্পানির একাধিক বাস নওগাঁ জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। প্রতিদিন সকাল ৭:০০ টা থেকে শুরু করে প্রতি ১ ঘন্টা পর পর রাত ১১:৩০ পর্যন্ত বাসগুলো ছেড়ে যায়। এসি ও নন-এসি উভয় ধরনের বাস এই রুটে চলাচল করে। এই রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে।
শ্যামলী>হানিফ>এসআর>রিফাত>কেয়া>বাবলু
 ভাড়াঃ নন-এসি ৪৫০ টাকাএসি ৮০০ টাকা

এবার দেখে নেয়া যাক দর্শনীয় স্থান গুলো:——————-

কুসুম্বা মসজিদঃ (মান্দা, নওগাঁ )- মান্দা উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী সড়কের ধারে অবস্থিত। জেলা সদর হতে দূরত্ব ৩৩ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায় ।রাজশাহী মহাসড়কে বাসযোগে ৪০ মিনিট সময় লাগবে। ১৫৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম গিয়াস উদ্দিন শাহ এর রাজত্বকালে জনৈক সোলায়মান ধুসর পাথর দ্বারা মসজিদটি নির্মাণ করেন। বর্তমানে পুরাতন ৫/- টাকার নোটে কুসুম্বা মসজিদের ছবি প্রতিস্থাপিত।


পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারঃ( বদলগাছী নওগাঁ ) নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুরে যাওয়া যায় |আনুমানিক দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিঃমিঃ বাসভাড়া- ৩০- ৪০ টাকা ।নওগাঁ জেলার সবচেয়ে বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থান বদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুরে অবস্থিত সোমপুর বিহার।সোমপুর বিহার এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম বিহার। এর দৈর্ঘ্য পূর্ব-পশ্চিমে ৯১৯ ফুট এবং উত্তর-দক্ষিণে ৯২২ ফুট। মূল ভবনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য ১৭৭টি কক্ষ ছিল। ৮০০ জন ভিক্ষুর বাসপোযোগী ছিল। এ বিহারে ১২৫নং কক্ষে মাটির পাত্রে খলিফা হারুন-অর-রশিদের শাসনামলের রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়। কোন সাধক বা ধর্ম প্রচারক মুদ্রাগুলি এখানে এনেছিলেন বলে অনুমান করা হয়। পিরামিড আকৃতির এ মঠের উচ্চতা ৭০ ফুট। ১টি শূন্যগর্ভ চতুস্কোণ কক্ষকে কেন্দ্র করে এর অন্যান্য সংযোজনীসমূহ গড়ে ওঠেছে। সমগ্র বিহারটি প্রাচীর বেষ্টিত।
বলিহার রাজবাড়ীঃ(নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলা) জেলা সদর হতে দূরত্ব ২০ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায় ।নওগাঁ সদর উপজেলায় অবসিহত প্রাচীনতম রাজবাড়ী। ১৮২৩ খৃষ্টাব্দে রাজ- রাজেশ্বরী দেবীর মন্দির ও নয় চাকার রথ এর জন্য প্রসিদ্ধ।

জমিদার বাড়ী:(নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলা)মেইনরোড দিয়ে যেতে হবে এবং ইহা সরকারি কলেজ সংলগ্ন অবস্থিত।সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে মহাদেবুর উপজেলায় সম্রাটের সৈনিকদের একটি দূর্গ ছিল এবং এই এলাকাতেই বাড়ী এমন কতিপয় ব্যক্তি এ সৈন্যবাহিনীর সদস্যও ছিলেন। তৎকালীন সময়ে সৈন্যবাহিনীর সদস্য বিরেশ্বর রায় চৌধুরী বংশধর নারায়ন রায় চৌধুরী জমিদারী লাভ করেন এবং ইংরেজ কর্তৃক রায় বাহাদূর উপাধিপ্রাপ্ত হন। রায় বাহাদুর নারায়ন রায় চৌধুর স্ত্রী ছিলেন রাজ রাজেস্বরী দেবী চৌধুরাণী। বর্তমানে জমিদার বাড়ীর মূল ফটোক এবং একাংশ জাহাঙ্গীরপুর সরকারি কলেজের সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

পতিসর কাচারীবাড়ীঃ(নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় অবস্থিত) জেলা সদর হতে দূরত্ব ৪৮ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায়।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত পতিসর কুঠিবাড়ী, যা আত্রাই উপজেলায় অবসিহত। পতিসর রবীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয় ও রাতোয়াল রথীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয় আজও স্মৃতি ধরে রেখেছে .

জবাইবিলঃ(নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় অবস্থিত): জেলা শহর হতে বাসযোগে আনুমানিক ২ ঘন্টা থেকে ২ঘন্টা ৩০ মিনিট লাগবে।নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় জবাই বিল মৎস্য উৎপাদনের একটি বড় উৎস। এটি একটি জলমহাল। আয়তন ৪০৩ হেক্টর। জলমহালটি ২০২০ সাল পর্যমত্ম ২০ বৎসরের জন্য মৎস্য বিভাগে হসত্মামত্মরিত। প্রতি ০৫ বৎসর অমত্মর অমত্মর নবায়নযোগ্য।বিলটি বর্ষা মৌসুমে অত্যমত্ম সুন্দর আকার ধারণ করে এবং বহু পর্যটক আসে।
জগদ্দল বিহারঃ(নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলায় অবস্থিত) জেলা সদর হতে দূরত্ব ৫৪ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায়। এটি একটি প্রাচীন কীর্তি। বর্তমানে স্থানীয় জনগণ এটাকে বটকৃষ্ণ রায় নামক একজন জমিদারের বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ বলে মনে করে।

ভীমের পান্টিঃ(নওগাঁ জেলার ধামুইর হাট উপজেলা) জেলা সদর হতে দূরত্ব ৬৭ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায়।ধামইরহাট উপজেলায় অবসিহত। বিষ্ণুর উদ্যোগে (৮৩৬-৯২০খ্রিঃ) নির্মিত স্তম্ভটি পাল রাজা নারায়ন পালের সময় নির্মিত।
দিব্যক জয় স্তম্ভঃ(পত্নীতলা উপজেলা, নওগাঁ);জেলা সদর হতে দূরত্ব ৫৭ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায় । পত্নীতলা উপজেলায় অবসিহত। দিবর দিঘীর মাঝখানে নির্মিত কৈবর্ত রাজত্ব কালের একটি কীর্তি
মাহি সন্তোষঃ(ধামইরহাট উপজেলা, নওগাঁ) জেলা সদর হতে দূরত্ব ৬২ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায়। ধামইরহাট উপজেলায় অবসিহত। এটি সুলতান রুকুন উদ্দিন বারবাক শাহ এর আমলে প্রধান শহর ছিল। এখানে পুরাতন মসজিদ ও রাজপুরীর ধ্বংসস্তুপ বিদ্যমান।

আলতাদিঘীঃ(ধামইরহাট উপজেলা, নওগাঁ) জেলা সদর হতে দূরত্ব ৫৬ কিঃ মিঃ। সড়কপথে যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায় । ধামইরহাট উপজেলায় অবসিহত। ১১১৩ গজ দৈর্ঘ্য ও ২২৫ গজ প্রসহ ৪২.৮১ একর আয়তন বিশিষ্ট আলতাদিঘী পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় স্থান।বাঁশবনে অবস্থিত  বিশাল বিশাল উইয়ের ডিপি এই এলাকায় বারতি আকর্ষণ ।লোহার মত শক্ত এই উইয়ের ডিপি গুলোর কোন কোনটার উচ্চতা প্রায় ৭ ফিট ।

এছাড়া আমি কুসুম্বামসজিদ ভ্রমণের সময় সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি কিছু কবর দেখেছি। তাতে আবার আরবিতে লিখা । সম্ভাবত এইটিও মুঘোল আমলের ।

মজার খাবারঃ
প্যারা সন্দেশঃ-নওগাঁ শহরের কালীতলা পূজা মন্ডপের প্রধান গেট সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি মিষ্টান্নের দোকান। যেখানে এই বিখ্যাত সন্দেশ পাওয়া যায় ।নওগাঁর প্যারা সন্দেশের রয়েছে শত বছরের সুখ্যাতি। শুরুতে পূজা মন্ডপের দেব-দেবীর উপাসনার উদ্দ্যেশ্যে তৈরি করা হলেও এখন এই সন্দেশ দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশে। বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারনে মিষ্টান্ন জগতের বড় একটি জায়গা দখল করে আছে এই সন্দেশ।প্যারা সন্দেশ তৈরির প্রথম ধাপে তরল দুধের সাথে চিনি মিশিয়ে জ্বাল করে তৈরি করা হয় ক্ষীর। ক্ষীর যখন হাতায় জড়িয়ে আসে তখন উষ্ণ ক্ষীর দু’হাতের তালু দিয়ে রোল করে সামান্য চাপ দিলেই তৈরি হয়ে যায় হালকা খয়েরী রংয়ের প্যারা সন্দেশ। তৈরি পদ্ধতি খুব সহজ। প্রতিটি প্যারা সন্দেশ প্রায় আধা ইঞ্চি চওড়া ও দুই ইঞ্চি লম্বা। ৭৫ থেকে ৮০ টিতে এক কেজি হয়। এক কেজি সন্দেশ তৈরি করতে দরকার হয় ৭ লিটার তরল দুধ। দুধ আর চিনি ছাড়া অন্য কোন উপকরন না থাকায় এই সন্দেশ রাখা যায় ১০ থেকে ১৫ দিন। আর কৃত্রিম উপায়ে ভাল রাখা যায় এক মাসেরও অধিক সময়।প্রতি কেজি সন্দেশের দাম পরবে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা।
এছাড়া মান্দাতেও পাওয়াজায় গুরের সন্দেশ ।
 নাওগা জেলার মিস্টির দাম খুবই কম । মাত্র ৫ টাকাতে আপনি মিস্টি খেতে পারবেন ।


কিছু তথ্য গুগল করে পূর্বের পোস্ট সংশোধিত করা হল 

No comments:

Post a Comment