Friday, July 1, 2016

বান্দরবান, প্রকৃতিপ্রেমিদের স্বর্গ, যার পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে অকৃত্রিম সৌন্দর্য । এর গহীনে এমন কিছু দারুণ জায়গা আছে যার খবর বেশীরভাগ সাধারণ মানুষই জানিনা, নাফাকুম তার মধ্যে অন্যতম । দুর্গম বলে মানুষ জন একটু কম যায় ওখানে, যার কারণে এখনো এখানে বিরাজ করে স্বর্গীয় সৌন্দর্য ।
কিভাবে যাবেন?
»» ভ্রমণ শুরুর দিন- রাতের বাসে ঢাকা ত্যাগ। (কল্যানপুর/কলাবাগান/সায়েদাবাদ থেকে বিভিন্ন বাস যায়)
»» প্রথম দিন - সকালে বান্দরবান শহরে পৌঁছলেন, তারপর থানচি যাবেন লোকাল বাস বা চান্দের গাড়িতে । তারপর তিন্দু- পদ্মমুখ-থুইসাপাড়া
»» দ্বিতীয় -দিন -- থুইসা পাড়া- আমিয়াকুম-সাতভাইকুম-সাতভাইপাথর- নাক্ষিয়াং মুখ- থুইসা পাড়া
»» তৃতীয় দিন - থুইসা পাড়া- জিনাপাড়া- নাফাকুম- পেনেডিং পাড়া- রেমাক্রি বাজার
»» চতুর্থ দিন - রেমাক্রি বাজার-রাজা পাথর- তিন্দু- থাঞ্চি- বান্দরবান শহর- ঢাকা।
জনপ্রতি খরচ কম বেশি ৬০০০ টাকার মত লাগতে পারে ।
আপনি নিজ দায়িত্বে থানচি পর্যন্ত যেতে পারলেই হল, বাকি পথ পাড়ি দিতে আপনাকে গাইড নিতে হবে । গাইডই আপনাকে বাকি ৩-৪ দিন স্পট গুলো ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে ।
পাহাড়ী এলাকায় আপনাকে আদিবাসীদের ঘরে থাকতে হবে, প্রতি রাত ১০০-১৫০ টাকা দিতে হয় । রান্নার জিনিস পত্র (মসলা/তরকারী) আপনাকে সাথে নিয়ে যেতে হবে, গাইড রান্না করে খাওয়াবে । মনে রাখবেন, ওখানে কোন বাজার পাবেন না, আদিবাসীদের কাছ থেকে বড় জোর চাউল আর পাহাড়ী মুরগী কিনতে পারবেন, বাকি গুলো আপনাকে থানচি থেকে কিনে নিয়ে যেতে হবে, যে কয়দিন ঘুরবেন অগুলো সাথে বহন করতে হবে ।
তবে যারা নাফাকুম যেতে চান তাদের জন্যে বেটার হয় যদি একই সাথে আমিয়াকুম- সাতভাইকুম ও দেখে আসে, তখন থানচি থেকে এক রুট দিয়ে ঢুকে অন্য রুট দিয়ে পুনরায় থানচি আসা যায়, যার কারণে একই খরচে ৩-৪ টা দারুণ জায়গা ঘুরে আসা যায়, তবে কষ্টটা একটু বেশি হয় তখন । অনেক হাঁটা লাগে, হেঁটে হেঁটেই আপনাকে প্রকৃতির স্বাদ আস্বাদন করতে হবে ।
এইসব জায়গায় ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়া যাবেনা, যারা অ্যাডভ্যাঞ্চার পছন্দ করেন, যে কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিকে হাসি মুখে মেনে নিতে পারেন তাদের জন্যেই এই অসাধারণ জায়গাগুলো । থানচির পরে ওই গহীন জায়গাগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকেনা ।
জানেনই তো, জিনিস যেটা ভাল তার দাম একটু বেশিই হয় ।
ঠিক তেমনি যেটা একটু বেশি সুন্দর, অন্যান্য স্পটের চাইলে যেগুলো একটু আলাদা, তার জন্যে আপনাকে একটু বেশিই কষ্ট করা লাগবে । আর হ্যাঁ, সাথে লাইফ জ্যাকেট আনতে ভুলবেন না ।
ব্যাগ পত্র গুছিয়ে আজকেই রওনা দেন, নয়তো কিছুদিন পরে এই সৌন্দর্য আর থাকবেনা, কারণ আমরা পর্যটন শিল্প রক্ষার চাইতে ধ্বংস করতে বেশি ওস্তাদ; রাতারগুল আর খইয়াছড়া তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ।


No comments:

Post a Comment