Thursday, July 7, 2016

সুন্দরবন টুর ডিটেইলস - tour details of Sundarbans
সুন্দরবনে সাধারনত তিনি রকমের টুর হয়:
#শর্ট টুর: করমজল
এটা সুন্দরবনের প্রথম স্পট। মংলা থেকে চার ঘন্টায় ঘুরে আসা যায় অনায়াসেই, কোন পারমিসনের প্রয়োজন হয়না, ২৩ টাকার প্রবেশ টিকিট সংগ্রহ করলেই যথেস্ট। এখানে রয়েছে বনে হাটার জন্য একটি ট্রেইল ও ওয়াচ টাওয়ার, সুন্দরবনের অন্য স্পটগুলোতে হরিণ কুমির বা বানর দেখতে পান বা না পান করমজলে দেখতে পাবেন শিওর। কারন তাদেরকে বেধে রাখা হয়েছে। এ দৃশ্য অবশ্য যে কোন চিড়িয়াখানাতেও দেখা যায়।

#মাঝারি টুর: হারবাড়িয়া
আমার দেখা সু্ন্দরবনের সবচেয়ে গোছানো ও সুন্দর স্পট এই হারবাড়িয়া। চিড়িয়াখানা ছাড়া করমজলের সব গুনই আছে হারবাড়িয়ায়। এখানে পাবেন আরেকটু গহীন বনের অনুভুতি। এই স্পটটি সুন্দরবনের আরেকটু ভেতরে হওয়ায় ঘুরে আসতে একদিন পুরো লেগে যায়, অনেকে নৌকাতে রাতেও থাকে। বন বিভাগের পারমিশন ছাড়া ট্রেইলে হাটা যাবেনা। পাশ পারমিশন হয়ে গেলে আপনার সাথে দেয়া হবে একজন গান ম্যান। যেহেতু গান ম্যান সাথে যায়, তাই বুঝতেই পারছেন এটা কোন খেলনা বন নয়, হালুমের মোটামুটি কাছাকাছিই আছেন আপনি। এই স্পটে প্রায়ই দেখা মেলে বাঘের কাঁচা পায়ের ছাপ। তাই চোখ কান খোলা রাখুন!
নাব্বতা সংকটের কারনে মোংলা পোর্টে এখন আর বড় জাহাজ খুব একটা আসেনা। সব আনলোড হয় এই হারবারিয়ার মাঝ নদীতেই। তাই সেখানে গেলে আপনার দেখা মিলবে বিশাল দেহি সামুদ্রিক জাহাজ, যা আমাদের দেশী সাধারণ কার্গোগুলোর ২০-৫০ টার সমানও হয়)

#লং টুর: কটকা- কচিখালী-হারবাড়িয়া-করমজল
সুন্দরবনের পরিপুর্ন স্বাধ যদি কেউ পেতে চায় তাহলে তাকে এই টুরে যেতেই হবে। আগের স্পটগুলোও কভার করা হয় এই টুরে, সাথে যোগ হয় গহীন বনে প্রবেশ ও বাঘের রাস্তা ধরে হাটার সুযোগ।এই টুরে পুরো তিন দিন লেগে যায়। লঞ্চ নিয়ে চলে যাওয়া হয় সুন্দরবনের একেবারে শেষ মাথায়। গহীন বনের যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শুরু হয়েছে বঙ্গপসাগর, সে দৃশ্য চোখে না দেথলে বলে বোঝানো যাবে না। সাধারণত বাঘ দেথা না গেলেও খোলা মাঠে হরিন দেখতে কটকায় খুব একটা ভাগ্য লাগেলা।এর পাশেই কচিখালী স্পট, সেখানেই অবস্থান কচিখালী বিচের। এই টুরে নৌকায় করে ঘুরা হয় ছোট খালে। বড়শি দিয়ে ধরা যায় মাছ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বাঘের পায়ের ছাপ। তিন দিন খাওয়া দাওয়া সহ সব কর্মকান্ডই হয় লঞ্চে।

(খরচ নির্ভর করে সংখ্যা ও সময়ের উপরে তাই এ বিষয়ে কোন তথ্য লাগলে ইনবক্সে করতে পারেন। সময় করে সবাইকেই রিপ্লে দেয়ার চেস্টা করবো। বলতে পারবো তখন কেমন খরচ চলছে।)

ডিসেম্বর জানুয়ারী এই দুই মাস নিয়মিতই টুর অপারেটরদের প্যাকেজ থাকে। চাইলে তাদের প্যাকেজে অন্যান্যদের সাথে মিলে টুরে যাওয়া সম্ভব। আর নিজেরা যেতে চাইলে ছোট দুই একটি গ্রুপ মিলেও টুরে যাওয়া যেতে পারে। অথাবা নিজেরা ইভেন্ট করে কয়েকজন মিলে করা যেতে পারে ভ্রমন গ্রুপ। অনেকেরই হয়ত ধারনা ৪০/৫০ জনের কমে সুন্দরবন যাওয়া যায়না, কিন্তু মজার ব্যাপার হল মাত্র ৮-১০ জনেই হতে পারে একটি গ্রুপ, আর এর চেয়ে যত বেশিই হোক সমস্যা নেই। আর নিজেরা গ্রুপ করে গেলে খরচ পড়ে সাভাবিকের তুলনায় কম। তবে চাইলে
খুলনা ও মংলা দুই যায়গা থেকেই জাহাজে ওঠা যায়, কিন্তু খুলনার জাহাজগুলো মোংলা হয়েই যেতে হয়, তাই মোংলা থেকে ওঠাই বেটার।
আর ঢাকা থেকে মংলার যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভালই বলা চলে। সায়দাবাদ থেকে সরাসরি বাস আছে, একেবারে ঘাটে নামিয়ে দেবে। বাস থেকে নেমে ৫০ কদম এগুলোই জাহাজ। তবে মোংলার সবই সেমি চেয়ার কোচ, দুই একজন লোক দাড়িয়েও নিতে পারে। এসিতে যেতে হলে বা ট্রেনে ভ্রমন করতে হলে যেতে হবে খুলনা। তবে সময় লাগবে বেশি। সেখান থেকেও মোংলা আসা যায় অন্য গাড়িতে। আর খুলানা থেকেও ওঠা যায় সুন্দরবনের লঞ্চে।

(আমার বাড়ি মোংলাতে, ঐ দিকের থাকা-খাওয়ার নিরাপত্তা বা অন্য যে কোন সমস্যায় যোগাযোগ করতে পারেন। যে কোন তথ্য লাগলেও বলতে পারেন বিনা সংকচে। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব হেল্প করবো। তবে শর্ত একটাই, আপনার এলাকাতে আসলে আমাকেও হেল্প করতে হবে কিন্তু :)

No comments:

Post a Comment